Translate

Wednesday, August 19, 2020

করোনার কারনে সেশনজট।

১৯৯০ সালের পরে বাংলাদেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলো সেশন জট তীব্র আকার ধারন করতেছিলো। একেকজনের ছাত্রের পাশ করতে প্রায় ৮-১০ বছর ও লাগতেছিলো। সো এইভাবে পাশ করার কারনে পরে অনেক ছাত্র আর পেশাগত জীবনে প্রবেশ করতে পারতেছিলেঅ না। সেশনজটের কারনে বসে থাকা সময় না কাটানোর দরুন অনেক নিরীহ ছাত্র ছাত্রী রা  অনেক সময় সো কলড ছাত্র রাজনীতিতে ইনভলব হয়ে তাদের জীবনটাকেও ধ্বংস করে দেয় বা হত্যা হয়ে যায়। আমি নিজেও এরকম অনেক কাহিনী দেখেছি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সেশনজট কমানোর জন্য তৈরী করা হয়েছিলো প্রাইবেট বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৯২ সালে- বাংলাদেশের প্রথম প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় অথবা অতীশ দীপংকর ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এবং টেকনোলজী। আশাতীত পর্যায়ে সাফরল্য পাওয়া গেলেঅ সেশনজট নিরসনে এবং পরবর্তী কালে পাবিলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশন জট কমানোর জন্য সেমিষ্টার সিষ্টেম চালু করার জন্য সিদ্বান্ত হলো। আমি ছিলাম সেই সিদ্বান্ত মোতাবেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে তেরী হওয়া প্রথম ভ্যাচের ছাত্র যা চালু হয়েছিলো বাংলাদেশে প্রথমবারের মতোন দুইটা ডিগ্রী একসাথে অর্জন হবার জন্য তৎকালীন মৎস্য এবং পশু সম্পদ মন্ত্রনালয়ের অধীনে সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ফ্যাকাল্টি অফ লাইফ সায়েন্স এবং সিলেট সরাকরি ভেটেরিনারি কলেজ নামে (থারো সাথে আরো তটি ভেটেরিনারি কলেজ কেন নিয়ে শুরু করা-  চট্রগ্রাম সরকারি ভেটেরিনারি কলেজ, দিনাজপুর সরকারি ভেটেরিনারি কলেজ এবং বরিশাল সরকারি ভেটেরিনারি কলেজ যা পরবর্তীতে পরিবর্তন হয়- চট্রগ্রাম বেটেরিনারি এবং এনিম্যাল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাকি দুটি হাজী দানেশ বিজ্ঞাস ও প্রযুক্তি বিশ্ববিধ্যালয় এবং পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর অধিভুক্ত করা হয়।এর সাথে আরো পরে ১২ টা কলেজ শুরু হবার কথা থাকলেও পরবর্তীতে সেই বরাদ্দের টাকা সম্ভবত গায়েব হয়ে যায় যার পরিমান প্রায় ১২০০ কোটি টাকা গায়েব হয়ে যায় বা অন্যান্য কলেজের বরাদ্দ বা আর চালু করা সম্ভব হয় নাই। 



প্রথমেই বলে নেই এইখানে একসাথে ২ টা ডিগ্রী দেবার কথা হয়- ১) ডক্টর অফ ভেটেরিনারি মেডিসিন এবং ২) এ এইচ (এনিম্যাল হাজবেন্ড্রি)। সেই মোতাবকে মেরিটে চান্স ও হয়ে যায়। সকল খানে পরীক্ষা হয় ১০০ নাম্বারে এবং ১০০ নাম্বারের স্কুটিং এ- এইখানে পরীক্ষা হয় ২০০+১০০ নাম্বারে। সব মিলিয়ে আমার সেখানে মেরিটে চান্স হয়। উচ্চশিক্ষার্থে আমার বাবা বিশ্ববিধ্যালয়েল শিক্ষক মালয়েশিয়া , বৃটেন এবং স্কটল্যান্ডে থাকার কারনে আমি যথাসময়ে সঠিক সিদ্বান্ত নিতে পারি নাই। ইচ্ছা ছিলেঅ প্রাইবেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করবো কিন্তু সব ভাই বোনের পড়াশোনার কথা চিন্তা করে এবং ঠিক সে মূহুর্তে আমাদের বর্তমান বিল্ডিং এর কাজ শুরু হবার কারনে আর আব্বাও দেশের বাহিরে শিক্ষা ছুটিতে থাকার কারনে সব মিলিয়ে আর্থিক সংগতি হয়ে উঠে নাই। থখনকার দিনে ১৯৯৮ সালে প্রাইভেটে পড়তে গেলে প্রায় ৬-৭ লাখ টাকা খরচ হয় যা দিয়ে একটা ৫ তালা বিল্ডিং বানাইয়া ফেলােো যাইতো। সেশন জটের কারনেই প্রাইভেট বিশ্ববিধ্যালয়ে পড়তে চাওয়া এবং তার মধ্যে স্কুটিং সহ চান্সও পেয়েছিলাম ওআই সি তালিকাভুক্ত বিশ্ববিধ্যালয় আই্ ইউ টি তে মেকানিক্যাল ইন্জিনিয়ারিং এ- কিন্তু সেখানেও এককালীন টাাকা দিতে হবে প্রায় ২ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা যা খরচ করা বা বাসা থেকে নেয়া সম্ভব হয়ে উঠে নাই। চান্স পেয়েছিলাম সরাসরি মেডিকেলে - রাজশাহী মেজিকেল কলেজে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের গেজেটও নাম উঠে এবং প্রথম আলো পত্রিকাতেও রোল নাম্বার উঠে কিন্তু জামাত মিবির চক্র বাসাতে কল দিয়ে মিথ্যা কথা বলে আমাকে ভর্তি হতে বাধা দেয় এবং তাতেও মন খারাপ হয়ে উঠে- সেখানেও ছিলো সেশনজট। তো সিলেট সরকারি ভেটেরিনারি কলেজকে সংক্ষেপে বলা হতো সিসভেক আর আমি ছিলাম পঞ্চম ব্যাচে। ভর্তি শেষ হবার পরে বসে বসে ক্লাস শুরু হবার অপেক্ষা করতাছি আর তখনি প্রথম বুঝতে পারলাম সেশন জট কাকে বলে। ১১ মাস বসে থাকার পরে যখন ক্লাস শুরু হলো থকন দেখি উপরের দিকে প্রায় সব সেমিষ্টারেই সেশনজট।প্রথম  কনফিডেন্স হারালাম  পড়াশোনার প্রতি এবং টানা ৩ সেমিষ্টার কমপ্লিট করার পরে ৪র্থ সেমিষ্টারে শত্রতামূলক ইচ্ছা করে ফেল করিয়ে দেবার কারনে ( জীবনে কখনো কোন সাবজেক্টে ফেল করি নাই) পরীক্ষা আর দিতে পারলাম না। ভেবেছিলাম ধার্মিক পদ্বতিতে (দাড়ি, টুপি এবং নামাজ পড়লে [০৪ মাস চেষ্টা করলাম] থাকলে হয়তো পড়াশোনা কমপ্লিট করতে পারবো কিন্তু সেমিষ্টার ড্রপ করে আর সাহস পাইলাম না পড়াশোনা করার- পড়াশোনা ক্ষান্ত দিলাম। ৩ সেমিষ্টারের সব ডিটেইলষ নিয়ে বিশ্ববিধ্যালয় থেকে নিজেকে বহিস্কৃক করে নিলাম এবং পরে ময়মনসিংহে ফিরে এসে এ্যাপল টেকনোলজী এর এ্যাপল ওয়ার্ল্ড ওয়াইড এর একটা প্রোগ্রাম নিলাম বলতে গেলে ৩ সেমিষ্টারের মতো- ১৬ -১৮ মাস। এইটা আমেরিকান একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে কানেক্টেড ছিলো। তখন ময়মনিসংহ এর বিখ্যাত সরকারি কলেজ আনন্দ মোহনেও ইংরেজীতে মেরিটে চান্স পেয়েছিলাম- আমার বাবা বিদেশে অবস্থান করেও বলেছিলো যে তুমি বাসাতে থেকে আনন্দমোহনে পড়াশোনা করো - ভালো হবে । কিন্তু সেশন জটের কারনে আর রাজী হই নাই্। জাতীয় বিশ্ববিধ্যালয়েও ছিলো ৩-৪ বছরের সেশনজট। 



এই সেশনজট এখণ চলতাছে করোনা কালীন লকডাউন সিচুয়েশনে। অনেকেই হয়তো ধীরে ধীরে পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ হারাইয়া ফেলাইতাছে। থুবই ডিপ্রেশনে আছে উচ্চ মাধ্যমিক এ দেয়া পরীক্ষার্থীরা। চাইলে বাংলাদেশেন সকল সরকারি বেসরকারি বিশ্ববিধ্যালয় এবং সরকারি কলেজে র ক্লাস রুম গুলো ব্যবহার করে শুধূ উচ্চ মাধ্যমিক এর পরীক্ষা টা নিয়ে নিতে পারে শিক্ষা মন্ত্রনালয় তবে সামাজিক দূরত্ব মাষ্ট বি। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে পারে না এরকম সকল প্রোগ্রামই বাংলাদেশ থেকে এই মূহুর্তে নিষেধ করা প্রয়োজন কারন এখনো করোনার ভ্যাকসিন হাতে আইসা পৌছায় নাই। সেগুলো  হইতাছে- স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং গন পরিবহন, ধর্মীয় মজমা (মুসলিম এবং হিন্দু সম্প্রদায়- ২টা ই যেখানে খুব ক্লোজ কন্ট্রাক্টে যাইতে হয়)  এবংরাজনৈতিক সভা সমাবেশ এবং প্রোগ্রাম ও। জাতিসংঘ সারা বিশ্বে স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করেছে। বিশ্বের অনেক দেশ তাদের এয়ার রাইন্স গুলোকে এমন খানে রেখেছে যে চাইলেও তারা ২০২৩ সালের আগে সেগুলোকে চালু করতে পারবে না। ক্যালিফোর্নিয়ার মরূভূমি, অষ্ট্রেলিয়ার মরুভূমি - এই সকল খালে রাখা হয়েছে প্লেন গুলোকে আর খুলে রাখা হয়েছে ইন্জিন  এবং যন্ত্রাংশ।



২০১৩ সালে সম্ভবত এই করোনা রুপ ধারন করে এবং তখন নাকি মারা যা য় প্রায় ৪০০০+। আর এই বছর প্রায় ৭ বছর পরে বাংলাদেশে দেখা গেলো মৃত্যু ছাড়িয়ে গেছে ৪০০০+ এবং ইউএসএ তে মারা গেলো প্রায় ১৭৪০০০+। ্‌ইউ এস এ অনেক বড় দেশ আর বাংলাদেশ একটি ছোট দেশ। বাংলাদেশ থেকে শত গুন বড় দেশে পেনডেমিকে মারা যাইতাছে ১৭৪ কে আর বাংলাদেশে অভার পপুলেটেড কান্ট্রি হিসাবে এইখানে যদি পেনডেমিক ছড়াইয়া পড়ে তাহলে তার সংখ্যা যে নিশ্চিত কোটি ছাড়াবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। 

উপরের কাহিনী আমার সেশন জটের কারনে শিক্ষা জীবন কমপ্লিট না হবার কাহিনী। করোনার কারনে অনেক ছাত্র ছাত্রী যারা মূষড়ে পড়েছে সেশন জট বা ষ্টাডি ব্রেকের কারনে তাদের জন্য ই আমার এই কাহিনী টা লিখা- বাস্তব কাহিনী। যেনো কেউ হাল না ছাড়ে। শিক্ষার কোন বিকল্প নাই। এখনো এ দেশের সচিব পর্যায়ে অনেক কেই পাওয়া যাবে যাদের বিশ্ববিধ্যালয় স্নাতক ঝীবন শেষ হয়েছে প্রায় ৮-১০ বছল বয়সে। ১৯৯৮ সাল থেকে পাবলিক বিশ্ববিধ্যালয়ে শুরু হওয়া সেমিষ্টার সিষ্টেমে এতো দ্রুত পড়াশোনা হইতেছিলো যে - আমরা অনেকেই সেশনজটের কথাটা ভুলে গিয়েছিলাম - শেসে প্রকৃতিই আবার মনে করাইয়া দিলো। বসে থাকা ছাত্র ছাত্রীদেরকে বলতে চাই প্রয়োজনে ১/২ বছরের পড়াও আগে থেকে পড়ে রাখতে পারো যদি পড়া শেষে হয়ে যাই। 



সেশন জটে মুষড়ে পড়া আমি যখন ষ্টাডি ব্রেকে চলে যাই তখন আমার মেইন ভরসা ছিলো প্রথম চালু হওয়া অডেস্ক - ফ্রি ল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং ওয়েবসাইট যেখানে প্রত েডলার উপার্জন করেই আমি পড়াশোনা ছেড়ে দেবার বা ষ্টাডি ব্রেকের সিদ্বান্ত না নেই। তারপরে এই বিষযের উপরেই আরো বিশদ লেখাপড়া করে এখনো আমি একজন ফুলটাইম ফ্রি ল্যান্সার এবং আউটসোর্সিং ওয়ার্কার হিসাবে জীবন যাপন করতাছি শুকরিয়া। ২০০২-২০১১ পর্যন্ত করেছি পড়াশোনা বা প্রা্িভেটের বা সরকারি প্রজেক্টের চাকুরীর পাশাপাশি পার্ট টাইম আর একণ ২০১১- আজো অবদি করতাছি ফুল টাইম। 

No comments:

Post a Comment

Thanks for your comment. After review it will be publish on our website.

#masudbcl