Translate

Thursday, December 3, 2020

ইন্টারনেট থেকে তৈরী হওয়া হেফাজতের গনজাগরন এবং সাথে আরো কিছু কথা।

আলেম, ওলামা, মাওলানা দেখলেই সহজে মানুষের মনে ভক্তি, শ্রদ্বা জেগে উঠে। মানুষজন তাকে শ্রদ্বা জানাতে চায়। তার সাথে হাত মিলায়। সালাম দেয় বা কথা বলে। কিন্তু কোন আলেম বা ওলামা বা মাওলানা আপনার চোখের সামনে কোন খারাপ কাজ বা ধর্ম বিরোধী (সাধারনত একজন আলেম খারাপ কাজ করতে পারে না) কাজ করে তাহলে আপনি তার প্রতি খুব স্বভাবতই শ্রদ্বা হারিয়ে ফেলবেন। কারন শ্রদ্বা রাখার মতো কাজ সে করে নাই হয়তো বা আপনার সামনে। একসময় বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গুটি কয়েক আলেম ওলামা মাওলানাদের ব্যাপারে ২/৩ টা খারাপ কথা শোনা যাইতো। ২/৩ টা খারাপ কাজের কথাও শোনা যাইতো। কিন্তু বন্যায় পানির তোড়ে যেমন সব ময়লা ভেসে যায় সাগরে সেরকম সারা দেশের আলেম ওলামা মাওলানাদের সমন্বিত আমলের গুনে সব খারাপ ভেসে যাইতো আর পরবর্তীতে তারা সব কিছু ঠিক করে ফেলাইতো। সেরকম ভাবে ইদানিং ও বিভিন্ন মাদ্রাসায় মাদ্রাসা শিক্ষক কর্তৃক বলাৎকারের ঘটনা বা একেবারে ছোট ছোট বাচ্চা মেয়েদের উপর ধর্ষনের ঘটনাও পত্রিকাতে আসে কম বেশী। এতোকিছু হবার পরেও বাংলাদেশের সকলের মনে আলেম ওলামা মাওলানাদের বিষয়ে একটি শ্রদ্বাবোধ সকলের ই কাজ করে। কিন্তু একটা বিষয় জেনে রাখা দরকার- এখণ ইন্টারনেটের যুগ। কোন একটা বিষয় বুলেটের গতিতে চারিদিকে ছড়িয়ে দেয়া টা এখণ এক সেকেন্ডের বিয়ষ। একসময় অজপাড়া গা ছিলো- মসজিদ মাদ্রাসার আভ্যন্তরীন বিষয়গুলো মানুষের নজরে আসতে অনেক সময় লাগতো। আর এখণ ইন্টারনেটের কল্যানে মসজিদ মাদ্রাসা বিষয়ক অনেক কিছু খুব সহজে জানতে পারে মানুষজন। বিশেষ করে হেফাজতের গনজাগরন চলাকালীন সময়ে সারা বিশ্বের একটা নজর ছিলো শাপলা চত্বরে। ফলে যে কোন বিষয় সহজেই মানুষের চোখে লেগে যায় দ্রুততার সহিত। ধারনা করা হয় হেফাজতের গনজাগরন প্রায় ১ কোটি লোকের সমাবেশ হইছে যা গিনিজ বুক অফ রেকর্ড স এ জায়গা করে নিয়েছে। 


হেফাজতের গনজাগরনে যারা অংশ গ্রহন করেছে তারা সব বৈধ ভোটার এবং বৈধ নাগরিক। বাংলাদেশে শতভাগ সুষ্ট নির্বাচন হলে হেফাজতে সহ সকল ধর্ম প্রান মুসুল্লীদের ভোট আছে মিনিমাম তিন ভাগের এক ভাগ। শতভাগ পরিস্কার নির্বাচন হলে মুসলিম ধর্মীয় রজিনৈতিক দলগুলো ৪০-৪৫ টা সংসদীয় সিট পেতে পারে মিনিমাম । চট্রগাম , ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী, চাদপুর, লক্ষীপুর এবং উত্তরবংগের কয়েকটা জেলাতে হেফাজতের ভালো দাপট আছে। সেখানে তাদের সাপোর্ট করা দল অনায়াসে জেতার মতো পরিস্থিতি রাখে যদি সকল ধরনের মুসলিম দলগুলো একজোট হয়ে যায়। হেফাজতের ক্ষমতাও আছে সকল ধরনের মুসলিম দলগুলোকে একসাথে করে একটি ভালো নির্বাচন তৈরী করা, অংশগ্রহন করা এবং দেশের বিভিন্ন খান থেকে জিতে এসে জাতীয় সংসদের প্রতিনিধিত্ব করা। হয়তো একসময় তাদেরকে দেখাও যাবে এবং আমরা হয়তো দেশের বাহিরে বসে থেকে সারা দেশের সংসদ সদস্য হিসাবে হেফাজত পন্থী রাজনৈতিক নেতাদের অংশ গ্রহন বা তেজোদ্দীপ্ক ভাষণও শুনবো। হেফাজতের ইসলামের আন্দোলনের কারনেই বাংলাদেশ আজ মুসলিম দেশ মাননীয় হাই কোর্টের রায় অনুযায়ী। এই হেফাজত ইসলামের গনজাগরন ও মুসলিম গনজাগরন নামে পরিচিতি সারা বিশ্বে - বাংলাদেশ মুসলিম গনজাগরন। এই গনজাগরনরে পরে বাংলাদেশের অনেক ধর্মীয় পন্থাকে বেধাত ঘোষনা করেছে কারন হেফাজতেরে লোকজন সারা দিন যে আমল করে তাই আপনি করে শেষ করতে পারবেন না। সৃষ্টিকর্তা, নবী, জান্নাত লাভ করার জণ্য হেফাজত নির্দেশিত একটি পথই যথেষ্ট বলে মনে করি- যার নাম হেফাজতের তরিকা বলেও খ্যাত অনেকখানে। আমাদের আজকের বিশ্বে দেড়শো কোটি মুসলিম ১৫০ টা উপায় বা পন্থা অবলম্বন করে চলে ফরে এই নানাবিদ বিভেদ আর মতৈক্য। সকল ধরনের সুন্নতপন্থী লোকদের একটি পতাকার ছায়ায় থাকা উচিত তাতে আমি মনে করি গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নাগরিক যারা মুসলিম তাদের মান সম্মান মর্যাদা আরো অনেক উপরে উঠবে। 




হেফাজতের গনজাগরনের অনেক মুসলিম দলের লোকজনও  অংশগ্রহন করেছিলো। সারা দেশের শাহবাগের গনজাগরনের বলয় তৈরী করার সময় হেফাজতের গনজাগরনে অংশগ্রহন করার আহবানও  ছিলো। আমি তখণ ময়মনসিংহের বড় মসজিদে অনুষ্টিত তাদের একটি সভা এবং সমাবেশ এ অংশগ্রহন করি। সেদিন শাহবাগ গনজাগরনের তেমন কোন প্রোগ্রাম ছিলো না বোধ করি। ভালো লেগেছে একজন মুসলিম হিসাবে হেফাজতের গনজাগরনের সাথে নিজেকে জড়িত রাখতে পেরেছি। আমার বাবা উদারপন্থী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হবার পরেও ধর্মীয় পন্থা হিসাবে ১৯৯০ সালের পর থেকেই তাবলীগের সাথে জড়িত। ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত আমরা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকাতে ছিলাম বা বসবাস করতাম। আমি ১৯৯০ থেকে কমবেশী মঞ্চ নাটকের সাথে বা তাদের কাজের সাথে জড়িত ছিলাম- সেই জন্য তাবলীগের লোকজনের অনেক কটু কথাও শোনতাম। অনেকে গায়ে হাত তুলতে পর্যন্ত উদ্যত হতো। কারন তাদের চোখে নাটক সিনেমা একেবারে হারাম। আবার সময়ে সময়ে সারা বিশ্বের যতো তাবলীগের লোকজন আসতো তাদের সাথে দেখাও করতাম। বাসার কাছের মসজিদে, তাদের সাথে সালাম কালাম বিনিময় ও করতাম আবার বাসা থেকে তৈরী করা খাবারও তাদেরকে মসজিদে নিয়ে যাইয়া খাওয়াইতাম। আমাদের আবাসিক এলাকার বাসাতে সারা বিশ্বের সকল মুসলিম দেশের মেয়েরা তাবলীগের জামাত অনুসারে আসতো আর ২/৩ দিন করে থাকতো। তারা যেহেতু বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশ থেকে আসতো তাই তাদেরকে ভিআইপি মর্যাদায় রাখা হতো বাংলাদেশে। অনেক মুসলিম দেশের পরীর মতো সুন্দরে মেয়েরা কাছে ডেকে আদর করতো বয়স কম থাকার কারনে এবং  বিশ্বের সব দেশের চকলেট মিমি খাওয়ার সৌভাগ্যও হতো। ১৯৯০ সালে বয়স ছিলো ১০। ১৩/১৪ বছর বয়স পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মেয়েদের সাথে কথা বলার সৌভাগ্য ও হয়েছে।

  

আমাদের বাসাতে ছোটবেলা থেকেই টিভি বা ডিশ বা স্যাটেলাইট কানেকশন ছিলো না। ধর্মীয় সমাজ ব্যবস্থা বলতে যা বোঝানো হতো তাই ছিলো। অনেক সময় বিটিভির দরকারি প্রোগ্রামগুলো মানুষের বাসাতে যাইয়া শুনতে হতো বা দেখতে হতো। অনেকেই সাদরে বসে দেখতে দিতো আবার অনেকেই কিছুটা পারিবারিক সিক্রেসী দেখাতো। পাবলিক বিশ্বদ্যিালয়ের শিক্ষেকের বাসাতে টিভি বা রেডিও বা ডিশ বা স্যাটেলাইট নাই ব্যাপারটা অনেকেই  খুব রিয়্যাক্ট করতো। অন্ততপক্ষে তখনকার দিনের উত্তাল ১৯৯০ পরবর্তী গনজাগরনের প্রত্যেকটা দিনের খোজ খবর নেয়া বা সেই সাথে থাকা একটা বিরাট ব্যাপার ছিলো কিন্ত আমার বাবার একমাত্র কাজ ছিলো মন  দিয়ে সারা দেশের পরীক্ষা নিরীক্ষার খাতা দেখা আর সকাল হলে বিশ্ববিদ্যালয় যাবার আগে বাংলাদেশের পত্রিকাটা এ টু জেড দেখা। এখনো আমার আব্বা (এখন অবশ্য আমার আব্বা ইউটিউব পুরো পুরি দেখতে পারে এবং খুজে খুজে খবর ও বের করতে পারে) পত্রিকাটা এ টু জেড পড়ে শেষ করতে পারে।  ১৯৯৮ সালে আমি বাসা থেকে বের হয়ে হলে পাড়ি জমাই এবং আমার জীবনের সেরা স্বাধীনতা টুকু উপভোগ করি। 



ধর্মীয় যাতাকলের বাহিরে যে আরো একটি জীবন আছে সেটা বুঝতে পারি। ধর্মটা যে জোর জবরদস্তীর ব্যাপার না সেটাও বুঝতে পারি। আবার ঈমানহারা হওয়া যাবে না সেটাও সেন্সে থাকে। সব মিলিয়ে মডারেট একটি মুসলিম ফিলিংস আমার সাথে থাকে। ১৯৯৮ সালেই আমরা আমাদের বাকৃবি আবাসিক এলাকার বাসভবন ছেড়ে নিজস্ব বাসভবনে চলে আসি (বর্তমানে ২০ নম্বর ওয়ার্ডে - মসিক ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনে)। এইখানে আসারপরে বাসাতে তাবলীগের মহিলারা ১৯৯০ সাল থেকে সপ্তাহে একদিন এসে এক জায়গায় বসে তালিম করতো। ব্যাপারটা সেই সময়ে এমব্রেসিং এর মতো একটা ব্যাপার হলেও যেহেতু বাবা মা এলাও করে তাই আর কিছু বলতে পারি নাই। প্রতিবাদ করলে বলতো তুমি নিজে বাসা বানিয়ে নাও সেখানে তোমার মন মতো চইলো বা থাইকো।  ১৯৯৮ সালে নিজেরা বিল্ডিং এর কাজ শুরু করে একতালা বানানোর পরে কাজ থেমে যায়। সেই একতালাতেই ২০০৬ সালে সম্ভবত আবারো শুরু করে এই প্রতি সপ্তাহে একবার করে মহিলাদের তাবলীগের তালিম করার রেওয়াজ। কিছুটা পিছু হটে গেলাম এবং একটু হতভম্বও হয়ে গেলাম। সবচেয়ে অবাক লাগলো যে আমি তখন পুরোপুরি একজন যুবক। এরকম একজন যুবকের অবিবাহিত সিচুয়েশনে সেখানে বা সেই বাসাতে তাবলীগের মহিলাদের একসাথে হয়ে তালিম করাটা কতোটুকু যৌক্তিযুক্ত। পরে দেখলাম এদের কোন নিজস্ব হুশ জ্ঞান নাই। তারা তাবলীগের জন্য জীবন ও দিয়ে দিতে প্রস্তুত। থাকি বাবার বাড়িতে - প্রতিবাদ করলে আবারো বলতাছে যে তুমি নিজে বিল্ডিং করে নাও আর সেখানে তুমি তোমার মন মতো থাকো। 


১৯৯০ সালে যখণ প্রতিবাদ করেছি  তখন স্যাটেলাইট বা ডিশ কানেকশণ না দিলেও দিয়েছিলো কম্পিউটার। তখন সাদা কালো উইন্ডোজ ছিলো। সেটা ১৯৯৪ সালে আইসা রংগিন উইন্ডোজ হয়। তখন আমি নবম দশম শ্রেনীতে উচ্চতর গনিতের বিপরীতে কম্পিউটার সায়েন্স নেই এবং এসএসসি তে ভালো মার্কস পাই। তারপরে ২০০৩-২০০৪ সালে  বিশ্ববদ্যিালয় পড়া না চুকাতে পেরে আবারো এপটেক ওয়ার্ল্ডওয়াইডে ভর্তি হই এবং ১৬-১৮ মাসের একটা এসোসিয়েটস কোর্স শেষ করি। এর মাঝেই ফ্রি ল্যান্সিং এর নেশাতে পাইয়া বসে। টুকটাক উপার্জন ও করতে থাকি। তারপরে আবারো ডেস্কটপ কম্পিউটার কিনে দেয় ২০০৬ সালে এবং সেখানে বসেই ফ্রি ল্যান্সিং এর যাত্রা শুরু। সেই থেকে আজ পর্যন্ত কাজ করে যাইতাছি অবিরত। মাঝে শাহবাগ গনজাগরন চলাকালীন সময়ে ইউরোপের নাগরিকত্ব পাবার মতো অফারও পেয়েছি এবং সেই অফার আজো বলবত আছে। ইচ্ছা আছে এখণ বিয়ে শাদী করে পাত্রী নিয়ে পাড়ি জমাবো। স্থাণীয় মহিলাদের সেই তাবলীগের মহিলাদের প্রোগ্রাম ক্রমাগত চলতেই আছে । শুনেছি কোন খানে বালেগ পুরুষ থাকলে এবং অবিবাহিত থাকলে সেখানে মুসলিম ধর্মের অন্যান্য মহিলাদের যাতায়াত নিষেধ। ফলে তাদের এই অত্যাচারে আমি আরো বেশী নাটক সিনেমা প্রবন হয়ে উঠি। যখনি তারা আমাাদের বাসাতে আইসা বাংলা বা অন্য কোন ভাষাতে তালিম করতো (সপ্তাহে একদিন) তখনি আমি আমার নিজরে বাসাতে সংসার করার প্রতি আগ্রহ হারাইয়া ফেলি। মনে মনে ভাবতে থাকি অন্য কোন মেয়ে কি সহজে আমার পরিবারের সাথে মানাইয়া চলতে পারবে? বা কোন মেয়ে কি সহজে রাজী হবে। আমার জীবনে আমার পরিবারের সামনে আমার বাসাতে আমি কোন মেয়ের সাথে রুম ডেটিং করতে পারে নাই। তাবলীগের ভাষাতে এইটাকে বলা হবে নাউযুবিল্লাহ। কিন্তু হেফাজতের গনজাগরন সারা দেশে মেয়েদের মনে একটা দোলা দিয়ে গেছে। একটা পরিবর্তন তৈরী করে দিয়ে গেছে।  


২০১৩ সালের হেফাজত গনজাগরনরে পরে এই আন্দোলন দেখে রং পরিবর্তন হয়ে যাওয়া অনেক মেয়েই সংসারের প্রতি আমাকে আগ্রহী করে তুলে। আমি নিজে ও পাত্রী দেখতে ইন্টারেষ্টেড হই। এখণ বিগত ১বছর যাবত করোনা শুরু হবার পর থেকে পা্ত্রী দেখা হইতাছে এবং যে কোন সময় হয়তো একট সুখবর বা সু সংবাদ দিতেও পারবো।  চেষ্টা চলতাছে। ফ্রি ল্যান্সার দের বিয়ে হয় না ব্যাপারটা সত্য না। একজন ফ্রি ল্যান্সার হিসাবে আমার কাছে কয়েকটা মেয়েরই প্রস্তাব এসেছে। ইন্টারনেট থেকে তৈরী হওয়া হেফাজতরে গনজাগরন ও বাংলাদেশের মেয়েদের মাথাতে হিজাব/ষ্টাইলিশ হিজাব দিয়ে গেছে। অনেক মেয়েকেই সুন্দর সুন্দর বোরখাতে আবদ্দ করে গেছে। অনেক মেয়েদের মনে অনেক পরিবর্তন এনেছে। মডারেট মুসলিম মেয়েদেরকে সারা বিশ্বের সকল ধর্মে র লোকজনই পছন্দ করে যারা লিবারেল এবং ফ্রিডম। হেফাজতের ইসলামের গনজাগরনের পরে সারা দেশে তাবলীগের আর কোন প্রয়োজনীয়তা আমি ব্যক্তিগতভাবে ফিল করি না। আমার কাছে মনে হয় আলেম, ওলামা , মাওলানা ছাড়া আর কারো মুখে হাদিস বা কোরানের কথা মানায় না। একজন আলেম একটি ওয়াজ করে যে হাদিসের কথা বলবে আর তাতে যে তাছিড় পড়বে একজন সাধারন শিক্ষিত মানুষ সে কথা বললে কোন লাভ হবে না- মানুষ কিছুক্ষন পরেই ভুলে যাবে। ধর্মীয় সহী  রক্ষার্থে বাংলাদেশে আইন হওয়া উচিত যে : আলেম, ওলামা, মাওলানা বা মোহাদ্দেস ছাড়া আর কেউ ধর্মীয় দাওয়াত দিতে পারবে না বা হাদিসের কথা বলতে পারবে না কারন এইটা বলতে একটা যোগ্যতা লাগে। মনে চাইলো আর বলে দিলাম- ধর্মটা নিশ্চয় ই এতো ঠুনকো না। 

একসময় বিশ্বের অনেক দেশে তাবলীগের প্রচলন ছিলো। এখন আর সেরকম নাই। অনেক মুসলিমে দেশেও তাবলীগ নিষিদ্ব। যেমন: কুয়েত । স্বয়ং সৌদি আরবের মসজিদেও তাবলীগের লোকজন দেরকে থাকতে দেওয়া হয় না বলে শুনেছি। যে পন্থা গুলো ধীরে ধীরে বিলু্প্ত হয়ে যাইতাছে সে পন্থা গুলোকে আকড়ে ধরে রাখাকেই ধর্মীয় গোড়ামি বলে। হয়রত মোহাম্মদ মোস্তফা (আ:) যা যা করে গেছেন তা তা করাকেই সুন্নত বলা হয়। কিন্তু নব্যূয়তের বানী প্রকাশের ব্যাপারে উনি আলেম ওলামা মাওলানাদেরকে তার ওয়ারিশ করে গেছেন । সে হিসাবে সাধারন শিক্ষিত মানুষ নিজে ধর্ম  কর্ম  পালন করাটা ভালো কিন্তু ধর্মের কথা তারা না বলে আলেম ওলামাদের কাছ থেকে শোনাটা ভালো বলে আমি মনে করি। 


যে পন্থাগুলো সৌদি আরবেও প্রচলন নাই সে পন্থা গুলো বাংলাদেশে ও প্রচলন না থাকাটা ভালো মনে করি।   আপনি যদি কোথাও কোন খানে ধর্মীয় ফেতনা ফ্যাসাদ তৈরী করেন তাহলে সেখানে শয়তানের আবির্ভাব ঘটবে। আপনি যদি শয়তানের তরিকা ফলো করেন তাহলে আপনার মাঝে নানা ধরনের গোমরাহী তৈরী হবে। শয়তানের নির্দেশিত পথকে আপনার কাছে সহীহ মনে হবে। মানুষের উপর জোড় জবরদোস্তী করা, মানুষের কাছে টাকা পয়সা ভিক্ষা চাওয়া, সামর্থ্য  থাকা সত্বেও কাজ না করা, মানুষের সহায় সম্বল সম্পদের দিকে দেয়া বা কুনজর দেয়া , মানুষের ক্ষতি করার চিন্তা করা, মানুষের অর্থ  সম্পদের উপরে জোড় জবড়দস্তী করা . মানুষকে জোড় করে ধর্ম  পালন করানোর চেষ্টা করা, প্যাচে বা ঝামেলায় ফেলানো বা সর্বদা  অশান্তিতে থাকা, কোন সিদ্বান্ত জোড় করে চাপাইয়া এইগুলো হইতাছে  শয়তানের নির্দেশিত পথ বা শয়তানের অনুসরন করা। অনেক সময় শয়তান মানুষের রপ ধরে মানুষকে ধোকা দেয়। আর যদি কোনখানে ধর্মীয় ফেতনা ফ্যাসাদ তৈরী করে তাহলে সেখানে শয়তান সেখানকার শয়তানির কারনে সেখানে শয়থান একটা নেক সূরত ধারন করার চেষ্টা করে এবং মানুষকে ধোকা দেবার চেষ্টা করে। 


রাজধানী ঢাকা শহরের একটি সার্কেলে থেকে একটি কথা শুনতেছিলাম। যেই সার্কেল থেকে কথা শুনতেছিলাম সেই সার্কেল র ছেলে মেয়েরা ছিলো প্রজন্ড রকম খারাপ। ধর্মীয় কোন প্রথা তাদের মধ্যে ছিলো না। তারা প্রায়শই বলতো যে তারা যখন কুকাজ করে  বা কুচরিত্রের কাজ করে তখন তারা একটা বৃদ্ব লোককে দেখে। পরে অনেক ভাবে আলোচনা করে ডিসকাস করে শেষে বুঝতে পারলাম যে স্বয়ং শয়তান নিজে সেখানে একজন সুন্নতধারী মানুষের রুপ ধরার চেষ্টা করে। আরো অনেক খানে পড়াশোনা করে জানতে পারলাম যে: শয়তান যার যার মানুষের পেছনে পায়ুপথের কাছ পর্যন্ত উচ্চ মাটি থেকে। সেই হিসাবে ২.৫ ফিট বা ৩ ফিট। পরে আরো কয়েকখানে দেখলাম যে: অনেকে শয়তান কে ফোর ফিট বলে সম্বোধন করে। এই ফোর ফিট বলতে উল্টা পা বৈশিষ্ট্র সম্পূর্ন বলে। পরে আরো বুঝতে পারলাম যে শয়তানের উচ্চতা ২.৫ ফিট এবং তার পা উল্টো। সো সেই গ্ররপটাকে জিজ্ঞাসা করলাম যে: তোমরা কি পুরোপুরি কোন সুন্নতধারী মানুষকে দেখো নাকি হাফ দেখো। তো উত্তরে তারা বলতাছে তারা শুধূ মুখ দাড়ি আর বুক দেখে । তো আমি বললাম যে তোমরা তা পা দেখার চেষ্টা করো্। বলতাছে নাই্। বললাম: পেট -বলতাছে নাই। তো পরে বুঝালাম যে এইটা স্বয়ং শয়তান নিজে একটা সুন্নতের সুরুত ধরার চেষ্টা করে পুরোপুরি ধরতে পারে না। সৃষ্টিকর্তার লানতের কারনে সে মুখের ‍রুপ ধারন করলে পা খুজে পাওয়া যায় না এরকম। যাকে প্রথমেই বলে শুরু করেছি যে: স্বয়ং শয়তান নেক সুরুতে ধোকা দেয়। মুসলিম ধর্মেও শয়তানের ধোকা থেকে বেচে থাকার কঠিন নির্দেশ আছে। 


এখন আমাদের পুরো বিল্ডিংই ওযাই ফাই করা। বাংলাদেশের লোকজনই এখন ইন্টারনেটের ক্যলানে টিভি দেখাও ছেড়ে দিয়েছে। হেফাজতের গনজাগরন এবং শাহবাগের গনজাগরন ও সারা বিশ্বে দেখানো হয়েছে স্যাটেলাইটের কল্যানে বা ইন্টারনেটের কল্যানে। আমার বাবা ও এখন অনেক টা মডারেট এবং লিবারেল। আমাকে প্রায়শই তাগাদা দেন বিয়ে শাদীর ব্যাপারে- আমিও অনেকটা চেষ্টা করে যাইতাছি । কিন্তু ছোটবেলাতে যখন তাবলীগের যাতাকল কাজ করতো তখন চোখে মুখে অনেকসময় দিশেহারা বোধ করতাম। তখণকার সময়ে মসিজদে একজন সৌদি প্রিন্সের কাছে ওয়াদা করেছিলাম যে: আমি ১২০ দিন (মান্নত) সময় দেবো তাবলীগে। সেই হিসাবে ২০১৭-২০১৮ সালে সকল ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে শুধূ মোবাইল এবং ইন্টারনেট কে সাথে নিয়ে বের হয়ে যাই তাবলীতের লোকজনের সাথে। আমি সব মসজিদের বারান্দাতে বা বাহিরে বসে ইন্টারনেট ব্যবহার করে অর্ডারের কাজ কমপ্লিট করেছি মোবাইল ইন্টারনটে দিয়ে। কোথাও কোন মোবাইল চুরি হয় নাই। ২০১৩ সালের হেফাজত গনজাগরনের পর থেকে তাবলীগের লোকজন কয়েক ধাপে বিভিক্ত হয়ে যায়। সারা দেশের মসজিদে তারা মারামারি এবং হাতাহাতি করে এবং একটা ন্যক্করজনক (এক কথায় তাবলীগ সারা দেশের মানুষের শ্রদ্বা হারিয়ে ফেলায়) পরিস্থিতি তারা সৃষ্টি করে। সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে  আমার বাবাকে আমি গাইড করতে পারি এবং উনি সবচেয়ে ভদ্রতার তরকিাতেই এখন টুক টাক জড়িত আছেন। কিন্তু আশ্চর্য হলাম সারা বিশ্বে যখন বলতাছে এই শীতের মধ্যে করোনার প্রকোপ বাড়তে পারে ঠিক সেই সময়ে তারা আবারো তালিম বা ওয়াজ শুরু করার পায়তারা করতাছে বা করে যাইতাছে অলরেডী। করোনার পেনিডেমিক তো এখনো শুরু হয় নাই বাংলাদেশে। বাংলাদেমে শুধু রোগ ধরা পড়েছে বলা যায়। পেনিডেমিক তো শুরু হবে সামনে বোধ করি। কারন শুনেছি যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ধরা পড়ে প্রায় ২০১৩ সালে মারা যায় ৪০০০+। এখণ মারা যাইতাছে প্রতিদিন ১২০০-১৫০০ সরকারি হিসাব মোতাবেক। আর এখন বাংলাদেশে মাত্র ধরা পড়েছে। যদি হঠাৎ করে পেনডেমিক শুরু হয় তাহলে কি কোন উপায় আছে?


সরকারের প্রজ্ঞাপনে সরাসরি নিষেধ আছে ওয়াজ এবং তালিমের ব্যাপারে। কিন্তু তালিম এবং ওয়াজপন্থীরা রীতিমতো তারা সভা শুরু করে দিছে। এই ব্যাপারগুলো ইন্টারনেটে লাইভে এসে করা যাইতো। তালিম এবং ওয়াজ তারা লাইভে এসে করতে পারতো। সেখান থেকে যদি করোনা উপদ্রব শুরু হয় তাহলে তার দ্বায় দ্বায়িত্ব কে নেবে? আমি ব্যক্তিগতভাবে তাবলীগ কে পছন্দ করি না । কিন্তু আমার বাবা বা বোনেরা জড়িত থাকার কারনে সরাসরি প্রতিবাদও করি না। যখনি বাসাতে আগে ২০০০ সালের আগে তাবলীগের মহিলারা একসাথে হইতো তখনি আমি বাসা থেকে বের হয়ে চলে যাইতাম সিনেমা হল্ দুপুরের শোতে সিনেমা দেখা হয়েছে প্রায় ২০০- ধরতে গেলে প্রায় ৪ বছর। আর এখণ সেই সময়ে বসে বসে ইন্টারনেটে সিমেনা বা ইউটিউব নাটক ও দেখা হয়। কারন আমি এই জিনসগুলোর তেমন ভিত্তি খুজে পাই না। আমি ভিত্তি  খুজে পাই: ৫টা নির্দেশে- কালেমা, নামাজ , রোজ, হজ্ব এবং যাকাতে। আমি স্কেল জীবনে ক্লাসে প্রায় ২ বছর আরবী কে বাংলা এবং বাংলা কে ইংরেজী এবং ইংরেজী কে আরবী করে আরবী শিক্ষা পড়েছি। আবার অনেক সময়: আরবী থেকে ইংরেজী বা ইংরেজী থেকে আরবী করেছি। অনেক অনেক হাদিসের বইও পড়েছি কোথাও অত্যাচার বা ঝুলুম কে প্রাধান্য দেয়া হয় নাই। অত্যাচার বা জুলুম কে সরাসরি নাস্তিকতার কাতারে রাখা হয়েছে। শুনেছি স্বয়ং  নবীজিও যুদ্বের ময়দান ছাড়া বিধর্মীদেরকে মারতেন না বা কোন অত্যাচার ঝুলূম করতেন না। আর বর্তমানের নেক সুরুতে ধোকার মতো ধর্মীয় ব্যবসায়ীরা কতো ধরনের আজাব গজবের সৃষ্টি করে তা এই গ্রাম বাংলার সকলেই জানে। 


কয়েকদিন আগে এক লোক আইসা বলতাছে ভাই সুদ খাওয়া তো হারাম? ব্যাংকে জমে থাকা খুবই অল্প কিছু টাকার উপরে সুদ আসে সে সেটাকে হারাম বলতাছে। আমি বললাম ব্যাংকে জমে থাকার সম্পদের উপরে যে % বা সুদ আসে সেটা আমার কাছে বৈধ কারন আমি নিজে তা রিসিভ করে সেটা গরীব মানুষকে নিজের হাতে দেবো। সেটা আমি নিজে খাবো না আর আমি সেটা অন্য কাউকে আমার হয়ে দেবার কথাও বলবো না। ব্যাংকের দ্বায়িত্ব ব্যাংক পালন করবে : যার % তাকে দিয়ে দিবে আর যে % রিসিভ করবে সে তার যাকে মনে চায় তাকে দান করবে। তো প্রতিমাসে আমার প্রাইভেট ব্যাংক থেকে সুদ রিসিভ করি আর সেই টাকাটা গরীব মানুষকে দিয়ে দেবার চেষ্টা করি। আমি ঘুষ, উপহার বা উপঢৌকন কে হারাম মনে করি। সৃষ্টিকর্তা এবং তার নবীজির কথা বলে টাকা বা পয়সা নেওয়াকে হারাম মনে করি। পরে সেই লোক বলতাছে- তাহলে আমার হিসাব ঠিক আছে। ব্যাংকে আমার নামে বরাদ্দকৃত টাকা থেকে যে সুদ জমা হবে তা আমার কাছে আসবে এবং আমি তা রিসিভ করবো এবং তারপরে সেটা আমি একদমই  খেটে খাওয়া গরীব মানুষ যারা কিনা রাস্তার পাশে বসবাস করে তাদের কে বা যারা দুই বেলা খাইতে পারে না তাদের কে দান করে দিবো। 


হেফাজত কো রাজনৈতিক সংগঠন না কিন্তু ধর্মীয় তরিকা হিসাবে তারা জমে গেছে। তাদের প্রতি শ্রদ্বা থেকেই গত নির্বাচনে বা প্রহসনের নির্বাচনে আমি হাতপাখা তে ভোট দিয়েছিলাম কিন্তু আইসা শুনি দেশের কোন লোকই ভোট দিতে পারে নাই। একধরনর জোড় জবরদস্তী করে নির্বাচন কারচুপি হয়েছে। কিছু বলি নাই কারন আমি নিজেই দেখেছি সকাল ১১ টার দিকে কেউ নাই ভোটকেন্দ্রে। তারপরেও আশা করি হেফাজত সে রকম সততার জীবন যাপন করে সেরকম একটি সততার নির্বাচন সামনে আসবে এবং ইন্টারনেটে কাজ করা সকল ফ্রি ল্যান্সার রাও ভোট দিবে বা দিতে পারবে। 



No comments:

Post a Comment

Thanks for your comment. After review it will be publish on our website.

#masudbcl