Translate

Monday, September 7, 2020

প্রথম ল্যাপটপ কম্পিউটার ব্যবহারের অভিজ্ঞতা।

প্রথম যখন কম্পিউটার দেখি তখন ১৯৯২/৯৩ সাল। বাংলাদেশ কৃষি বিম্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক- উনাদের বাসাতে সেই সময় কার ফ্লপি ব্যবহার করা কম্পিউটার নিয়া আসে। সৌভাগ্যবশত আমার বাবাও আমাকে একটা কম্পিউটার এনে দেন যেটাকে ফ্লপি ড্রাইভের সাহায্যে সেট আপ দিয়ে ব্যবহার করা যেতো। আমিও খুব মনোযোগের সহিত সেটাকে ব্যবহার করা শিখে গেলাম এবং সেই সময়ে সেটাকে ব্রিফকেস কম্পিউটার নামে অভিহিত করা হতো। আমি তখন আরো একটা বিশাল সুযোগ পাইলাম যাকে বলা হয় সেই সময়কার গোল্ডেন স্কোপ। স্কুলে হায়ার ম্যাথ যেখানে ম্যানডাটরি ছিলো সেখানে সেটাকে ঐচ্ছিক করা হয় এবং মাধ্যমিক ‍ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড থেকে সেখানে কম্পিউটার সায়েন্স কেও ঐচ্ছিক করা হয়। তখনকার সেই সুযোগ টা আমি কাজে লাগানোর চেষ্টা করি। নবম শ্রেনীতে প্রথম সাময়িক পরীক্ষায় হায়ার ম্যাথে আমি মাত্র ৫৬ মার্কস পাই এবং বুঝতে পারি যে এইটাতে সম্বভত আমি লেটার মার্কস তুলতে পারবো না। পরে আমি সেটা পরিবর্তন করে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে নেই। টানা ২ বছর ৪ মাস সেটা পড়ে মোটামুটি লেটার মার্কস সহ আরো ভালো মার্কস পাই যা আমার টোটাল নাম্বারে অনেক সাহায্য করে। কম্পিউটার সায়েন্সে যে ধরনের ম্যাথ বা ক্যালকুলেশন ছিলো তা পরবর্তীতে ২০০৮/০৯ সালে নির্বাচন কমিশনে কাজ করতে যাইয়া টের পাই একটা - এএফআইস (AFIS- Advanced Fingerprint Interface System) যা প্রত্যেক মানুষের ভোটার আইডি কার্ডের পিছনে কালো রংয়ের অংশে এবং মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের প্রথমে একটা স্পেশাল কোড দিয়ে দেয়া থাকে। এইটা স্ক্যান করে প্রোগ্রামার রা তার সমস্ত তথ্য বের করে নিতে পারবে। যেমন- IATA (International Air Transport Authority) আপনি বিশ্বের যতোগুলো এয়ারপোর্টে যাবেন এবং পাসপোর্ট এক্সেস করবেন আইইটিএ এর ডাটাবেজে সেটা থাকে কারন তারা সেটা ট্রাক করতে পারে ম্যাক কম্পিউটারের মাধ্যমে। সে ধরনের প্রোগ্রামিং শিখেছিলাম আমি যখন নবম /দশম শ্রেনীতে কম্পিউটার সায়েন্স পড়ে থাকি। আর তার সাথে ছিলো খুবই জটিল বাইনারি (অকটেন, ডেসিমাল, হেক্সাডেসিমাল) পদ্বতির প্রোগ্রামিং এবং কোডিং। ম্যাথ এক্সামে ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে না দিলেও - এই কম্পিউটার সায়েন্সে ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে দেয়- বাইনারি পদ্বতির ক্যালকুলেশন গুলো বের করা জন্য। তখন অলরেডী স্কুলের কম্পিউটার ল্রাবরেটিরী ও স্থাপন করা হয় এবং টানা ২ বছর আমরা সেই ল্যাবরেটরি তে কম্পিউটার রিলেটেড ক্লাস করি এবং পড়াশোনাও করি। তখন ডেস্কটপ কম্পিউটার সাথে উইন্ডোজ ৯৫- মনে রাখার মতো বিষয়। আর যখন ফাইনাল পরীক্ষা দেই তখন অলরেডী  উইন্ডোজ ৯৮ নিয়ে সারিা বিশ্বে কাজ শুরু হয়ে গেছে কিভাবে এবং কখন আসবে আর কেমনতর ভাবে আসবে? স্কুলে হায়ার ম্যাথ না নেবার কারনে অনেকেই আমাদেরকে ক্রিটিসাইজ করতো অনেক সময়- বলতো হায়ার ম্যাথ ছাড়া কি আর স্কুল পাশ হয় নাকি- কিন্তু সেই তারাই আজকে এই করোনা পরিস্থিতিতে কম্পিউটার বা ইন্টারনেট টেকনোলজীর কাছে হার মেনে বাসাতে বসেই তাদের অফিসিয়াল কার্যক্রম চালিয়ে যাইতাছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি- স্কুলে হায়ার ম্যাথ না করিয়ে সেখানে আরো আধুনিক ইন্টারনেট বা কম্পিউটার টেকনোলজী শিখানো উচিত। আমরা আমাদের স্কুলে ১০/১১ জনের মতো কম্পিউটার সায়েন্সে পড়াশোনা করি এবং এস.এস.সি তে ভালো মার্কস নিয়ে পাশ করি। আমাদের সেই সময়কার চেষ্টা ই হয়তো আজকে সারা দেশে কম্পিউটারের বিস্তারে বা যুগের পরিবর্তন করতে অনকে সাহায্য করেছে। সেই সময় কার হায়ার ম্যাথ করা লোকগুলো হয়তো গতানুগতিক ধারাতেই যুদ্ব  করে যাইতাছে।

তারপরে উইন্ডোজ ৯৮/মিলিনিয়াম/উইন্ডোজ ২০০০/ উইন্ডোজ সার্ভার/উইন্ডোজ এনটি এরকম নানা ধরনের প্রোগ্রামের সহিত দিন দিন আপডেট হইতে থাকলো। তিন ধরনের কম্পিউটারের কথা সবসময় শুনতাম-

  • ডেস্কটপ- টেবিলের উপরে রেখে যে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।
  • ল্যাপটপ- কোলের উপরে রেখে যে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।
  • পিডিএ- পারসোনাল ডিজিটাল এসিট্যান্স ( যা বর্তমানে টাচ ফোনকে বলা যায় )।
২০০৫ / ০৬ সালের দিকে প্রথম দেখি ল্যাপটপ কম্পিউটার। বড় বড় ধনী লোক যারা তারা ব্রিফকেসের মতো কিছু একটা নিয়ে ঘুরে বেড়াইতো। বা তখনকার দিনে যারা থুব দরকারি কাজ করতো তারা এই ব্রিফকেস কম্পিউটার বা এক ধরনের ল্যাপটপ কম্পিউটার নিয়ে ঘুরে বেড়াতো। ২/১ খানে দেখার সুযোগ পেয়েছি। ততোদিনে সারা দেশে বিস্তর কম্পিউটার নেটওয়ার্ক তৈরী হয়েছে- মানুষ জনকে ইনকারেজ করতে হতো কম্পিউটার ব্যবহার করার জন্য। যারা বড়লোক তারা প্রত্যেকেই ব্যাপারটাকে ততোদিনে ড্রয়িং রুমের ফ্যাশন  হিসাবে নিয়ে নিয়েছে। ব্যবহার করতে পারুক বা না পারুক তারা তাদের কম্পিউটারে শো- তাদের ড্রয়িং রুমে দেখাতো। তারপরে আস্তে আস্তে সেটা বেডরুমের দিকে আসতে শুরু করে বা ষ্টাডি রুমের দিকে। তারপরে কয়েক বছর সেটাকে বেডরুমে রাখা হতো এবং এখন বিগত ৭/৮ বছর যাবত সবাই ল্যাপটপ কম্পিউটার কে তাদের বেডরুমে জায়গা দিয়ে দিয়েছে। অনেকের জন্য ঘরের বউ এর সতীন হিসাবে বিবেচিত হয়ে গেছে তবে যাদের বৌরা শিক্ষিত তারা ও প্রত্যেকেই ১/২ টা ল্যাপটপ কম্পিউটারের মালিক। ২০০৫/২০০৬ সালের দিকে ২/১ খানে ল্যাপটপ কম্পিউটা টাচ করার সুযোগ পাই। সে সময় আমি এপটেক ওয়ার্ল্ডওয়াইড থেকে ১৬-১৮ মাসের সম্মিলিত একটা কোর্স ( ডিপ্লোমা ইন ইনফরমেশন সিষ্টেম ম্যানেজমেন্ট) শেষ করি এবং সেখানেই আমি প্রথম ল্যাপটপ কম্পিউটার দেখতে পাই। মাঝে মাঝে ক্লাস শেষে বসে থাকতাম এবং কম্পিউটার রিলেটেড ম্যাগাজিন বা  ল্যাব এ থাকলে অনেক ধরনরে লোকজন বা মানুষ আসতো সেই এপটেক অফিসে- সেখানে অনেকের হাতে ল্যাপটপ দেখতে পাই এবং ২/১ জনের  কাছ থেকে আমি ল্যাপটপ নিয়ে দেখে থাকি এবং প্রথম ল্যাপটপ কম্পিউটার টাচ করে দেখার সুযোগ পাই।

তারপরে থেকে তক্কে তক্কে ছিলাম যে কিভাবে ল্যাপটপ কম্পিউটার রিলেটেড একটা কাজে নিজেকে ইনভলব করা যায়। ২০০৬ সালে রামপুরা বনশ্রী আবাসিক এলাকাতে একটা আইটি ফার্মে  কাজ করতে যাইয়া আবারো এক গার্মেন্টস মালিকের কাছে ল্যাপটপ কম্পিউটার দেখতে পাই। সেটা মাঝে মাঝে ব্যবহার ও করতাম। সে প্রায়শই নিয়ে আসতো  এবং আরজে ৪৫ কান্ক্টের দিয়ে সেটা আমাকে ইন্টারনেট ব্যবহার করার সুযোগ দিতো। বনানীতে তার গার্মেন্টস আছে এবং সেই প্রথম আমাকে হাতে ধরে ল্যাপটপ কম্পিউটার এর কাজ শিখায়। তার বড় ভাই সে গার্মেন্টস এর মালিক এবং তিনি আমাকে আইটি ফার্মে নিয়োগ দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন তার ছোট ভাই এর কাছ থেকে ল্যাপটপ কম্পিউটার টা ভালো করে শিখে নেবার জন্য।  এরকম নি:স্বার্থ ভাবে কাউকে এরকম উপদেশ দিতে আর দেখি নাই যা পরবর্তী জীবনে অনেক বড় কাজে দিলো। তখন প্রথম বাংলা সফটওয়্যার বানানোর কাজ চলতাছে ফোনেটিক, অভ্র, বিজয়, একুশে, প্রভাত বা এরকম আরো কিছু সফটওয়্যার ইনজিনিয়ার রা একসাথে কাজ চালাচ্ছিলো । সময় পাইলেই তাদের সভা সেমিনার গুলোতে যোগাযোগ করতাম এবং সেখানেও ম্যাক্সিমামা টাইমে  ল্যাপটপ কম্পিউটারের সাথে প্রোজেক্টরের ব্যবহার করে বড় স্ক্রিনে অনেক কিছু দেখা বা শেখার সুযোগ করে দেয়। তারপরে দেশে বাংলা সফটওয়্যারের আবির্ভাব ঘটে এবং সারা দেশে কম্পিউটারে বাংলা লেখার এবং শেখার ও একটা ধুম পড়ে যায়। দেশের রাজেনৈতিক অবস্থা পরিবর্তনের স্বাপেক্ষে তখন আবারো ময়মনিসংহে নিজের বাসাতে চলে আসতে হয়। দ্বিতীয় বারের মতো বাবার কাছে একটা ডেস্কটপ কম্পিউটার পাই। শুরু হয় ওয়ান ইলেভেন এবং মাইনাস টু রিলেটেড গ্যানজাম যার নাম মঈনুদ্দিন ফখরুদ্দিন। আমার দেখা বাংলাদশের সেরা ভালো সময়। বাসাতে বসে ডেস্কটপ কম্পিউটার পাইলাম আর ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কানেকশন ও পাইলাম। বসে বসে অনেক কাজ শিখলাম আর ফ্রি ল্যানসিং এবং আউটসোর্সিং এর অনেক কাজও শিখলাম এবং করলাম। ফরেনার বা ফরেন বায়ার রা বিনামূল্যে কাজ শিখাতো। যে সকল মেসেনজারে তখন কাজ শিখতাম-

  • উইন্ডোজ লাইভ
  • মাইক্রোসফট মেসেন্জার
  • ইয়াহু
  • স্কাইপে
তবে আমার কাছে খুবই ভালো লাগতো লাইভ ম্যাসেন্জার। সেটাতে সবচেয়ে বেশী ফিচার ছিলো। সে সময়ে ব্যবহার করা বা ওপেন করা একটা স্কাইপে একাউন্ট এখনো আমি ব্যবহার করি- skype: masudbcl  একদম নীচে দেয়া একটা একটা বাটন আছে সেখানে ক্লিক করলে আপনি আমার স্কাইপে তে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন। 

ওয়ান ইলেভেনের সময় ছিলো ২ বছর। ২ বছর দেশের সকল রথী মহারথীকে হাউস জেল তৈরী করে বন্দী করে রাখা হয় এব ংবাংলাদেশ সেনাবাহিণী সারা দেশে খুবই তৎপরতা চালায়। সকল ধরনের রাজনৈতিক গ্যানজাম বন্ধ ছিলো। অনেককে ধরে ধরে প্রকাশ্য দিবালোকে পিটানো হয়। আমার মতে সেই দুই বছর দেশ খুব ভালো ছিলো।  সেই সময়ে বাংলাদেশ সরকারের নেয়া প্রজেক্ট- নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে এর ভোটার তালিকা হালনাগাদে ইউএনডিপি প্রজেক্টে কাজ করার জন্য সিলেক্টেড হই। তার আগে বাংলাদেশ সেনাবাহিণীর কাছে ভোটার তালিকা তে লিপিবদ্ব হই এবং জাতীয় পরিচয়পত্র ও পেয়ে যাই খুব দ্রুত। সে সময়ে সেনাবাহিণীর সৈনিক বা অফিসারদের দেখলাম একসাথে সারিবদ্বভাবে বসে থেকে ল্যাপটপ কম্পিউটার দিয়ে  ভোটার তালিকা তৈরী করতে। তাই বুঝতে পারলাম যে আমাকেও ভোটার তালিকা তৈরীর কাজ ল্যাপটপ দিয়ে করতে হবে । নির্বাচন কমিশন সবিচালয়ের প্রজেক্ট অফিস থেকৈ এপয়েন্টমন্টে নিয়ে ট্রেনিংএ যাই এবং ট্রেনিং শেষে ১২-১৫ টা ল্যাপটপ নিয়ে ফিল্ডে কাজ করতে হবে বুঝতে পারলাম। সিটিসেল জুম দিয়ে প্রতিদিন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের ওয়েবসাইটে রিপোর্টিং করতে হবে বুঝতে পারলাম। আমার দ্বায়িত্ব পড়লো ময়মসিংহ জেলাতে। ময়মনসিংহ শহরে আমাদের নিজস্ব বাসা - এখানে ২০ নং ওয়ার্ডে। নিয়োগপত্র নিয়ে ময়মনসিংহ শহরে আসলাম। বিভাগীয় কমিশনারের কাছে নিয়োগপত্র দিয়ে লোকাল ট্রেনিং এর আয়োজন করলাম ডিসি অডিটোরিয়ামে। সেখানে লোকালি ময়মনসিংহ নির্বাচন কমিশন থেকে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর এবং টিম লিঢারদেরকে ট্রেনিং দিয়ে সবকিছু বুঝাইয়া দেয়া হলো। সেই সাথে নির্বাচন কমিশন থেকে আসা ল্যাপটপ ও পেয়ে গেলাম পার হেড একটা করে। ডাটা এন্ট্রি অপারেটর দের ল্যাপটপ ছিলো টিম লিডারের দ্বায়িত্বে আর একটা পারসোনাল ল্যাপটপ আমি পাইলাম নির্বাচন কর্মকর্তার অনুমতি স্বাপেক্ষে  সার্বক্ষনিক ব্যবহার করার জন্য। ময়মনসিংহে আমি ঈশ্বরগঞ্জ, নান্দাইল এবং ভালুকা এই ৩ টা উপজেলাতে কাজ করি। ৩ টা উপজেলাতেই আমি গাড়ে ঝুলিয়ে নিয়ে যাইতাম ল্যাপটপ কম্পিউটার। সিটিসেল জুম ব্যবহার করে প্রতিদিন রিপোর্ট সেন্ড করতাম নির্বাচন কমিশন  সচিবালয়ের ওয়েবসাইটে- উপজেলার ভোটার তারিকা নিবন্ধনের হালনাগাদ।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের  দেওয়া ল্যাপটপ টি ছিলো ডেলের। সেই ভারী এবং সেই শক্ত। মাঠ পর্যায়ে ছেলে পেলে দেরকে দেখেছি একজন আরকেজনের সাথে ল্যাপটপ নিয়ে ছোড়াছুড়ি করতে। আমারো হাত থেকে পড়ে গেছিলো ২/৩ বার কিন্তু তেমন কিছু হয়  নাই। জাতিসংগের ইউএনডিপির অর্থায়নের প্রজেক্ট, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের প্রজেক্ট, ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রনয়ন ও জাতীয় পরিচয়পত্র এর প্রজেক্টে নিজেকে ইনভলব রাখতে পেরে যার পর নাই খুশী হয়েছিলা, সেই সাথে আমি পেয়েছিলাম ল্যাপটপ ব্যবহারের ফুল ফেস সুযোগ। সেই থেকে শুরু- আজো ল্যাপটপ কম্পিউটার আমার সংগী তবে আমার প্রিয় ব্যান্ড এইচ পি - ডেল এবং এইচ পি এই দুইটা দিয়ে যতো মনে চায় ততো ব্যবহার করার একটা মজা পেয়েছি। যে কোন সময়ে যে কোন খানে বসে ল্যাপটপে কাজ করা এবং গ্রামে গঞ্জ এলাকার মানুষের অবাক হয়ে তাকিয়ে  থাকা - এই ব্যাপারটাও অনেক এনজয় করেছি। আমি যখন ফুলটাইম ল্যাপটপ ব্যবহার করি তখন শতকরা ১% ও ও কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা ল্যাপটপ ব্যবহার করে কিনা সন্দেহ। একদিন থানা শঅহবাগে কয়েকজন বড় ভাই এর সাথে দাড়াইয়া ছিলাম। তখন একটা সুন্দরী স্মার্ট মেয়েকে দেখলাম- শাহবাগ থেকে বাটা সিগন্যালের দিকে যাইতাছে এবং হেটে হেটে সে একহাতে ল্যাপটপ কম্পিউটার রেখে আরেকহাতের আঙুলে ল্যাপটপ কম্পিউটারের স্ক্রিন ব্যবহার করতাছে। মেয়েটা ফেস পরিচিত ছিলো। আর সচরাচর ঢাকা শহরের অলিতে গলিতে প্রাইভেট কারের সামনে পেছনে বাকেটে (যেখানে ইন্জিন বা লাগেজ রাখে তার ঢাকনা) উপুর হয়ে অনেক অনেক মেয়েকে দেখেছি ল্যাপটপ কম্পিউটার ব্যবহার করতে রাস্তাতে নিজের গাড়ীর উপর দাড়িয়ে দাড়িয়ে(তখন রাস্তা ঘাট মোটামুটি ফাকাই ছিলো- ছিলো বাংলালায়ন, কিউবি বা ওলোর মতো স্মার্ট ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি) - কখনো কোথাও কোন কাজ না পারলে সেখানে একটা গ্যানজামের মতো তৈরী হতো এবং দাড়িয়ে পড়ে সেই সমস্যার সমাধান করে পরে যাইতে হতো (ল্যাপটপ, ইন্টারটে, ওয়েবসাইট সংক্রান্ত)- বোধ করি সেই সকল স্মার্ট মেয়েরা আজকে ইউরোপ আমেরিকার স্থায়ী বাসিন্দা। আর আজকাল কার দিনে যদি কেউ শুনে যে- ল্যাপটপ নিয়ে উপুর হয়ে বসে কাজ করতাছে- যে কোন বদমাইশ এইটার মিনিং করবে নিশ্চিত উল্টা।

বাংলাদেশে অনেকেই ল্যাপটপের একটা উল্টা মিনিং করে থাকে যার কোন মানে নাই। ল্যাপটপ একটা কম্পিউটার ডিভাইস যা শুধূ কম্পিউটার ব্যবহারের জণ্যই ব্যবহৃত হয়। আমি যে প্রজেক্টে কাজ করেছিলাম সেটা এখন সরকারের অধিদপ্তর। যার নাম জাতীয় পরিচয়পত্র অনু বিভাগ- যেখান থেকৈ জাতীয় পরিচয়পত্র এনরোলমেন্ট করা হয়। শেষ খবরে দেখেছি সেটার পরিচালকের নামও আমার নামে- বাংলাদেশ মিলিটারির একজন জাদরেল অফিসার- বিগ্রেডিয়ার মাসুদ। উনিই্ এখন প্রধান কাকে কাকে জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হবে বা না হবে সে ব্যাপারে সিদ্বান্ত নেবার জন্য। 

No comments:

Post a Comment

Thanks for your comment. After review it will be publish on our website.

#masudbcl