Translate

Thursday, September 3, 2020

গৃহশিক্ষক। কেমন পড়েছি এবং আমার নিজের অভিজ্ঞতা।

গৃহশিক্ষক কালচার টা আমাদের জমানার আগে তেমন ছিলো না। শিক্ষকরা ক্লাসেই সব কিছু পড়াইয়া দিতো ফলে আলাদা করে গৃহশিক্ষকের কাছে পড়াশোনা করতে হতো না। আমাদের সময়ে আমি শুনেছি- স্কুলের টিচাররা বলে তাদের হক নষ্ট করতাছে আলাদা করে ষ্টাডি করতাছে এবং নিজের সাথে যোচ্চুরি করে বা নিজের সাথে প্রতারনা করে- কারন সে ১০০% দেখাইতো না বা পড়াইতো না। আমাদের স্কুলে যারা ব্যাক বেঞ্চার তারা কখনো গৃহশিক্ষক এর কাছে পড়তো না। কারন তাদের স্থানীয় ভালো জায়গা জমি থাকলেও তাদের হাতে ক্যাশ টাকা কম থাকতো অলওয়েজ। সময়টা ছিলো ১৯৮৬-১৯৯৮, যে সময়কার গল্পটা লিখতে বসেছি। 

আসল ঘটনাটা বলতে হলে বলতে হয়- ১৯৯০ সালের গনজাগরন সংঘটিত হবার পরে এবং তথাকথিত নামমাত্র গনতান্ত্রিক ব্যবস্থার সরকার গঠিত হবার ফলে (পুরো গনতান্ত্রিক পদ্বতির সরকার বলা যাবে না কারন তখনতার দিনে সংসদে বসে ছিলো স্বধিীনতা বিরোধী, দেশ বিরোধী এবং পা কিস্তান পন্থী রাজনৈতিক দল যাদের হেড অফিস ছিলো পা কিস্তানে)। ফলে শুরু হয় দেশে অসহনীয় পরিস্থিতি। হরতাল, অবরোধ এবং যান বাহন ভাংচুর, জনজীবনে অস্থিরতা এবং অসহযোগ আন্দোলন, আমদানী রপ্তানীতে ভাটা, মারামারি, খূনোখুনি এবং বহু রকমের গ্যানজাম বা ঝামেলার কারনে জিনিস পত্রের দাম বাড়তে শুরু করে এবং অন্যান্য পেশাজীবীদের মতো শিক্ষকরাও তাদের বাড়তি উপার্জনের জন্য ক্লাসের বাহিরে বাসাতে যেয়ে যেয়ে পড়াশোনা শুরু করেন বা ব্যাচে পড়ানো শুরু করেন। আর কোচিং এর ব্যাপারটা প্রথম থেকেই অনকেটা জামাত শিবির পন্থী ছেলেপেলেদের (বর্তমানে নিষিদ্ব) হাতে ছিলো। তখণকার সময়ে ময়মনসিংহ শহরের এলাকা কেওয়াটখালী  কে ৭ নং ওয়ার্ড  এ নামকরন করা হয়। উপজেলা পরিষদ কে ভেংগে ময়মনসিংহ পৌরসভা গঠন করা হয় এবং পুরো ময়মনসিংহ শহরের গুরুত্বপূর্ন এলাকাকে তার আওতাধীন করা হয়। তার মাঝে পড়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয। তখনতার দিনের সাত নম্বর ওয়ার্ড বর্তমানের ১৯/২০/২১ নং ওয়ার্ড। আর সিটি কর্পোরেশনে র আওতায় এখন এই এলাকার নাম ২১ নম্বর ওয়ার্ড - আমি যেখানে থাকি সেখানে আর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকা হয় ২১ নং ওয়ার্ড। ২০ নং ওয়ার্ডে আমাদের জায়গা জমি ছিলো ১৯৮০ সাল থেকে। সেখানেই বর্তমানে বিল্ডিং করে আমাদের বসবাস। তো  স্থানীয় পর্যায়ে আমরা অনেকেই জায়গা জমি রাখার কারনে স্থানীয় অনেক শিক্ষক যারা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের হাই স্কুলের শিক্ষক ছিলেন তাদের সাথে ভালো একটা খাতির হয় এবং আমরা তাদের কাছে  অালাদা করে পড়ার সিদ্বান্ত নেই যাকে বলা হয় গৃহশিক্ষক। এইখানে বর্তমানের ২০ নং ওয়ার্ড এবং তৎকালীণ ৭ নম্বর ওয়ার্ডে দেশবিরোধী জামাত শিবির পন্তী একটা কোচিং সেন্টার ছিলো- সেখানে কিছূ কিছু ছেলে মেয়ে পড়াশোনা করতে আসতো এবং অনেকক্ষন সময় নিয়ে কোচিং করতো। তখনকার দিনে কোচিং এ অনেক ধরনের খারাপ কাজ হতো- কোচিং এর নামে ডেটিং, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুুয়া ছেলে এবং কোচিং এর মেয়েকে অপ্রীতিকর অবস্থায় পাওয়া, কোচিং এ পড়তে আইসা প্রেগন্যান্ট হয়ে যাওয়া, ছাত্রী শিক্ষক পালিয়ে বিয়ে করা বা  কোচিং এর টিচারকে বাসাতে নিয়ে যাইয়া একসাথে দুই কাজ করে ফেলা- প্রেম এবং পড়াশোনা। তো এই রকম ১৯৯০ সালের গনজাগরনের অংশগ্রহন করার কারনে অনেকসময় রেকী করতে আসতাম জয় বাংলার পক্ষ থেকে যে- আমার পরিচিত কোন কোন মেয়েটা কোন কোন খানে কি ধরনের কার্যকলাপে জড়িত আছে  এবং তা গোপনও রাখতাম। শুধূ নিজে নিজে সতর্ক থাকতাম কারন তখনকার সেনসিটিভ বয়সে কোন কথা বললে কার মনে কি আঘাত লাগে তা আর সহজে বোঝা যাইতো না। 

আমার জীবনের প্রথম  গৃহশিক্ষক ছিলেন একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। মোটামুটি ভালো মনোযোগ দিয়ে পড়াইতো আর আমারও মোটামুটি ভালো লাগতো কারন উনি ছোটভাই মনে করেই পড়াইতো। ক্লাস ৫ এ বৃত্তি দেবার সুযোগটা মিস করে ফেলি- মনটা একটু খারাপ হয়। সেই ছাত্র ভাইটি বুঝতে পারে এবং আমাকে পড়ানো ছেড়ে দেয়। খুব কাছেই মেয়েদের হল থাকার কারনে এক বড় বোন প্রায়শই বাসাতে আসতো এবং আমাদের পরিবারের সাথে ভালো মেলামেশা ছিলো - সেজন্য উনিও আমাকে কযেকদিন পড়ান। ছোট থাকার কারনে মেয়েদের হলে উনার রুমে পর্যন্ত আমার যাতায়াত ছিলো। দেখতাম - কয়েকজন মেয়ে একসাথে কয়েকটা রুমে ভাগাভাগি করে থাকতেন। তারপরে কয়েকদিন পরে উনার পরীক্ষা শুরু হয়ে যাবার কারনে আমাকে আর পড়াতে পারবেন না বলে দেন। ফলে আমার আরো একজন গৃহশিক্ষকের প্রয়োজন পড়ে। আসলে সবকিছুই ম্যাক্সিমাম স্কুলের ক্লাসে দেখানো হতো কিন্তু দুষ্ট থাকার কারনে ক্লাসে পুরো মনোযোগ বসানো যাইতো না। তার সাথে নিয়মিত কার্টূন দেখা, সেবা প্রকাশণীর গল্পের বই পড়া,  হুমায়ুন আহমেদের গল্পের বই পড়া এবং প্রাপ্তবয়স্কদের বই ও লুকিয়ে লুকিয়ে পড়ার কারনে ক্লাসে মনোযোগ ছিলো কম। আমার রোল অলওয়েজ ১১-২০ এর মধ্যে থাকতো। তারপরে হঠাৎ করে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকাতে আমরা যে বিল্ডিং এ ছিলাম (বাবা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলো বলে আবাসিক এলাকাতে থাকা হতো ১৯৯৮ পর্যন্ত, তারপরে ১৯৯৯ সালে চলে আসি বর্তমানের ২০ নং ওয়ার্ডে, সিটি কর্পোরেশন এলাকাতে)  তার পাশের বিল্ডিং এ এক বছর জুনিয়র এক মেয়ের সাথে তাদের বাসাতে এক টিচারের কাছে একসাথে পড়ার সুযোগ হয়। একজন টিচারের কাছেই সব সাবজেক্ট পড়া যাইতো। উনি ঘন্টা দুয়েক সময় নিয়ে পড়াতো। তাছাড়া স্কুলে উনি মেইনলি আরবীর শিক্ষকও ছিলেন। আর আমারও ৬ষ্ট শ্রেনীতে আরবী ছিলো। ভালো করে আরবী শিক্ষা বোঝার জন্য আরবী ইংরেজী করতাম- সেটাকে বাংলা- বাংলাকে আবার আরবী করতাম বা আরবী কে বাংলা তে লিখতাম এবং ভালো করে এই টা করার জন্য আমার অনেক ভালো রেজাল্ট আসে আরবীতে - মোটামুটি ১০০ তে ৯০ এর বেশী মার্কস পাইতাম বা ধারে কাছে থাকতাম। ৭ম শ্রেণীতেও আমার আরবী ছিলো। মেয়েদের জন্য ছিলো গার্হস্থ্য বিজ্ঞান। স্কুলের সেই শিক্ষক অনেক মোনযোগ দিয়ে পড়াইতে কিন্তু তার পাশাপাশি বাসাতে পারসোনাল ষ্টাডি রুমে আমি আরো একজন শিক্ষকের কাছে অংক টা পড়তাম আলাদা করে। এইভাবে পরের বছর ও আমার রুমে অন্য আরো একজন অংকের টিচার আসতেন। ক্লাস এইটে উঠে শুরু হয় একসাথে কয়েকজন টিচারের কাছে ব্যাচ করে পড়া। 

সকালে ঘুম থেকে উঠে ব্যাচে স্যারের কাছে পড়তে যাওয়া যে কোন ব্যাচমেটের  বাসাতে- সাধারনত ডাইনিং টেবিলে বসে পড়া হইতো। যদি স্যারদের বাসাতে পড়তে হতো তাও ডাইনিং টেবিলে ব্যাচ আকারে পড়ানো হতো। এককটা ব্যাচে ৫-৬ জন। একটা ডাইনিং টেবিলে ৫/৬ জনের বেীশ বসা যাইতো না। অষ্টম শ্রেনীর ফাইনাল পরীক্ষার পরেও বৃত্তি পরীক্ষার জন্য পড়তে হইলো একজন বিশ্ববদ্যিালয় ছাত্রের কাছে। সাথে ছিলো অংকের স্যার। ভালো করে পড়তে পারি নাই ফলে বৃত্তি পরীক্ষা দিলেও বৃত্তি পাই নাই। নবম শ্রেনীর উঠার সাথে সাথে শুরু হয়ে যায়- ২টা স্যারের কাছে নিয়মিত পড়া- একজন অংকের স্যার আরেকজন ইংরেজীর স্যার। মোটামুটি ১ম ক্লাস নাম্বার সবসময় ধরে রাখতাম। স্কুলে দুষ্টামি করা বা পরীক্ষার হলে টুক টাক দেখা, হলে বন্ধুদেরকে ম্যাক্সিমাম টাইমে খাতা দিয়ে দেওয়া এবং মাঝে মাঝে এক্সচেন্জ করে উত্তর লেখা, এই সকল ছিলো স্কুলের টার্ম পরীক্ষাতে  খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু কোন ইয়ার চ্যান্ড বা ফাইনার পরীক্ষায় ঘাড় গুরানোর মতো কোন উপায় ছিলো না। যা পারতাম তাই লিখে আসতাম কারন ফাইনাল পরীক্ষা গুলো ছিলো ভয়ে প্যান্ট ভিজাইয়া ফেলার মতো অবস্থায় বসে পরীক্ষা দিয়ে দেওয়া কারন নকল করা বা ধরা পড়লে সরাসরি ১ বছর লস সো স্কুলের প্রত্যেক বছরে ফাইনাল পরীক্ষা ছিলো ১০০% ঝামেলামুক্ত। মন ভরে পরীক্ষার খাতাতে লিখা এবং শেষে  রেজাল্টের জন্য অপেক্ষা করা -খুব একটা টেনশনের টাইম ছিলো। আমাদের স্কুলে পরীক্ষাতে খাতা দেয়া তো ফলে একুরেটলি জানা যাইতো কোথায় ভুল করেছি বা কি কি ভুল করেছি। চাইলে অনেক সময় ফাইনাল পরীক্ষার খাতাও বের করে দেখা যাইতো। আমার মনে পড়ে - সাময়িকী পরীক্ষাতে মাঝে মাঝে হেল্প নিলে স্যারেরা কিছু বলতো না। কিন্তু ফাইনাল পরীক্ষাতে কোথাও কোন ভুল করলে বা সাউন্ড করলে স্যারেরা নাম্বার কেটে দিতো বা টুকে রাখতো এবং পরে লেখা শেস হলে , পরীক্ষা শেষ হলে বা হলে খাতা গোছানোর সময় হলে বসে মার্ক করে দিতো কোন খাতা থেকে কতো নাম্বার কাটতে হবে। 

আমি ১৯৯৬ সারে এসএসসি পাশ করি যার প্রস্তুতি শুরু হয় ১৯৯৪ সাল থেকে। ঢাকা শিক্ষা বোর্ড এ আগে থেকে ঘোষনা দেয়া হয়ে যে ১৯৯৬ সালে প্রশ্নব্যাংক কাজ করবে না। প্রশ্নব্যাংক কাজ না করার কারনে ৫০০ অবজেকটিভ সুবিধা আমরা হারাইয়া ফেলি। ফলে এককটা সাবজেক্টের জন্য প্রায় ১ লক্ষ এমসিকিউ পড়তে হয় মিনিমাম( আমি ফলো করতাম ষ্টার অবজেকটিভ গাইড) , যার ফলে রেজাল্ট ডেভেলপ করার জণ্য যে বাই ডে পরিশ্রম শুরু করতে হয় এবং ১০ম শ্রেনীতে টেষ্ট শেষ হবার পরে খূব ভালো করে ট্রাই করা শুরু করি। সারা দেশের যতো নামকরা বিদ্যালয় আছে তাদের সকল প্রশ্নের সলভ করি এবং এইটা বুঝি যে প্রশ্ন তো সেরা সেরা বিদ্যালয়ের স্যারেরা করবেই তাই গুরুত্ব পূর্ন  বিদ্যালয় গুলো সলভ করা শুরু করি এবং ভালো রেজাল্ট ও পাই। স্কুলের ফাইনালে এস এসসিতে মোটামুটি ৯৫% কমন ফালাইতে সক্ষম হই। কিন্তু এমসিকিউতে যাইয়া একটু বিপদে পড়ে যাই। ৪০/৪১/৪২/৪৩ টা নিশ্চিত পারার পরে কয়েকটা কনফিউশন হিসাবে পেনসিল দিয়ে টুকাইয়া রাখতে হতো। তারপরে আশে পাশে একটু হেল্প নিয়ে -২/১ জনকে জিজ্ঞাসা করলে বাকীটা মিলানো যাইতো কারন বাংলাদেশের প্রথমবারের মতোন প্রতি সাবজেক্টে ১ লক্ষ এমসিকিউ পড়তে হতো মিনিমাম যা আজকাল কার দিনে সৃজনশীল পদ্বতিতে  দাড়াইছে। যে কয়টা এমসিকিউ পারতাম না সে কয়টা শেষ ১০ মিনিটে আশে পাশে ২/১ জন কে আসক করে কনফার্ম  হয়ে নিছি। প্র্রথমবারের মতো আনলিমিটেড এমসিকিউ পদ্বতিতে পরীক্ষা হবার কারনে স্যারোরও একটু রিল্যাক্স দিতো শেষ ১০ মিনিট।   ধরা যায় সাবজেক্ট প্রতি ১/২ মার্ক নিশ্চিত সাহায্যি নিছি কিন্তু শেষ ১০ মিনিট স্যারেরা একটু লুস দেবার কারনে একেবারে একজন আরকেজনকে জিজ্ঞাসা করার কারনে মাছের বাজারেও রুপান্তরিত হতো মাঝে মাঝে। যে যাকে যেই সাহায্য করতো- সেই সাহায্য টা আমি শুনে অনেকসময় নিশ্চিত হয়ে নিতাম। এমনও হয়েছে একজন আরেকজনকে ইচ্ছা করে ভুল বলতো। যা শুনে মিলাতে যাইয়া শিওরে উঠতে হতো। স্কুলের এক্সামে যে ২ জন বন্ধুর কাছে সাাহয্য পেয়েছি ধরতে গেলে সাবজেক্ট প্রতি ১/২ - তাদের একজন এখন উত্তরাতে গাড়ির ব্যবসা করতাছে এবং আরেকজন বৃটেনে রোবোটিক্স টেকনোলজী নিয়ে পড়াশোনা করেছে। স্কুলের টেষ্টে মার্ক পেয়েছিলাম ৮০৮ কিন্তু ফাইনালে আইসা মার্ক পাইলাম ৭৮৮ ( ষ্টার মার্কস প্রথম ডিভিশন)  ২০ মার্ক কমে  গেলো এবং রেকর্ড ও হয়ে গেলো একমাত্র আমার মার্ক কমে গেছে টেষ্টের থেকে- সকলের টা বেড়েছে আর আমারটা কমেছে। ১০টা সাবজেক্টে ১/২ করে যে হেল্প টা নিছি সেটা মে বি খোদা কাউণ্ট করে নাই কারন সকলের ই স্কুলের টেষ্ট থেকে ভালো রেজাল্ট হয় আর নয়তো মিনিমাম সমান সমান ছিলো। 

ভেবেছিলাম স্কুলের প্রাইভেট গুলো শেসে এইচএসসিতে এসে একটু শান্তি পাবো কারন কে বি হাই স্কুল এবং কে বি আই কলেজ দুইটাই খুব বিখ্যাত ছিলো। কিন্তু এসএসসির রেজাল্ট বের হবার আগেই বন্ধুরা প্রাইভেট শুরু করে দিলো। ভালো পরীক্ষা দিলেও তো অনেকে ফেইল করতো তখনকার সময়ে আর তাছাড়া কোন কোন খানে বিরাট নকলের আধিক্য ছিলো- ধরতে গেলে পুরো সাবজেক্ট এ  টু জেড  বই   দেইখা লিখতো এরকম রিপোর্ট ও ছিলো প্রত্রিকাতে। কিন্তু আমাদের স্কুলের সুনাম থাকার কারনে এমন কড়া গাইড দিতো যে পরীক্ষার হলে কাপড়ে ভেজাইয়া ফেলার মতো সিচুয়েশনও হইতো অনেক সময়। নকল করা তো দূরে থাক - কোন কিছু ২/১ মিনিট জিজ্ঞাসা করাও মুসকিল আর এক্সপেল হইলে তো শেষ- ১বছর। পরে আবার পরীক্ষা দিতে  হতো। এরকম এক পরিস্থিতিতে পরীক্ষা শেষ হবার পরে ভর্তি বা কোচিং শুরু হবে কিন্তু তার আগেই আমার বন্ধুরা প্রাইভেট শুরু করে দেয়। ফলে আমার ও শুরু করে দিতে হয়। প্রথম প্রথম তো গতি এবং স্থিতি কিছুই  বুঝি নাই। কারন তখনকার দিনে পরীক্ষামূলক ভাবে নবম শ্রেনীতে ২ টা সবাজেক্ট পাই নতুন- ১) কৃষি শিক্ষা এব ২ ) কম্পিউটার সায়েন্স। সকলেই যেখানে উচ্চতর গনিত নেয় সেখানে আমি নেই কম্পিউটার সায়েন্স যার কোর্স কারিকুলাম  এ মিল ছিলো ১৯৯২ সালে বুয়েটে শূরু হওয়া কম্পিউটার ইন্জিনিয়ারিং এবং নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়েও। দিন রাত খেটে স্কুল ফাইনালে আইসা জোটে প্রায় ৯৭ মার্কস। কৃষিতেও ভালো মার্কস আসে। কৃষিতে এতো ডিটেইলস পড়ানো হয় যে- বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিধ্যালয় আবাসিক এলাকার স্কুলে পড়ে মনে হয়েছে আমার কাছে যে আমি বুঝি কৃষি বিম্ববিদ্যালয় থেকে কৃষিতে আর কম্পিউটার সায়েন্স পড়ে মনে হয়েছে আমি বুঝি বুয়েট থেকে স্নাতক পাশ করে ফেলেছি। তো ইন্টারে গতি প্রথম এবং দ্বিতীয় পড়তে যাইয়া তো মহা বিপদে পড়ে গেলাম। পরে ইন্টারে ভর্তি হবার পরে বন্ধুরা বুদ্বি দিলো যে তুই গতি এবং স্থিতির থিওরী ছেড়ে দে- সেটা ছিলো ২৮ মার্কস। তো ২ বছর টানা টিউশানি পড়লাম প্রতি সাবজেক্টে ৩ মাস করে ২ বছরে ৬ মাস এবং সারা বছল টিউশনি পড়ে পড়ে কলেজের ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষাতে ভালো করে অংশগ্রহন করা হয় নাই। টেষ্টের পরে একেবারে ফাইনালি পড়তে বসলাম যে দুই বছর কি পড়েছি। দুই বছর কলেজ পালিয়ে ব্রক্ষপুত্র নদীর ধারে বসে ২৯ খেলতাম কয়েক বন্ধু মিলে। নিয়মিত কোন কাজ করলে সেটা যে মাথার ভেতরে গেথে যায় তা আসলে ইন্টারমিডিয়েটে আইসা টের পাইলাম। স্যারেরা বলতো তুমি খালি ম্যাথ গুলো করে যাও সব সাবজেক্টের- বাকি বাংলা এবং ইংরেজী গ্রামার একই। কলেজের ১ম ইয়ার এবং ২য় ইয়ারে খুব ভালো করে পরীক্ষা দেয়া হয় নাই।কলেজে সেমিষ্টার সিষ্টেমে পরীক্ষা হইতো। সেই থেকে প্রথম সেমিষ্টারের ছোয়া পাইলাম পরবর্তীতে দেখতে পেয়েছি ম্যাক্সিমাম বন্ধুই প্রাইভেট বিশ্ববিধ্যালয়ে সেমিষ্টার পদ্বতিতে ভর্তি হয়ে আমি বিশ্ববিধ্যালয় ক্লাস শুরু করার আগেই তারা ৩ সেমিষ্টার শেষ কের ফেলেছিলো। কলেজ ফাইনালে বসার আগে একই টেকিনক এপ্লাই করলাম- ০৩ মাস নাওয়া খাওয়া ভুলে সব কিছু পড়লাম আর সারা দেশের নাম করা কলেজগুলোর টেষ্ট পেপার কাভার করলাম। নিজে নিজে সাজেসন মেক করলাম এবং স্কুলেও আমি সাজেসন মাষ্টার ছিলাম। আমার সাজেসন নিয়ে পড়ে নাই এরকম কোন ব্যাচ মেট আমার স্কুলে এবং কলেজে ছিলো না। যারা খুব ভালো ষ্টুডেন্ট ছিলো তারা নিজেরা ও সাজেসন মেক করতো আর আমারটা মিলিয়ে দেখতো কিন্তু তাদের সাজেসন পাওয়া এক প্রকার টাফ ছিলো। কলেজের ফাইনালে আমরা ঢাকা কলেজের সাজেসন পত্র পাই এবং সেটা অনেকটাই কাজে লেগেছে। যথারীতী কলেজের ফাইনালে- ১৯৯৮ সালে গতি এবং স্থিতি আমি ছেড়ে দেই। ১৪ করে মিনিমান গনিত ১ম এবং ২য় তে। যে কোন ভাবেই হোক ১৩২ করতে হবে বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষাতে অংশ গ্রহন করতে হলে আর বায়োলজি এবং জোলজীতে ১৩২ থাকতে হবে মেডিকেল বা ভেটেরিনারি ভর্তি যুদ্ব তে অংশগ্রহন করতে। গনিত এবং বােয়োলজী ২ টাতে ই আমার ১৩২ করে থাকে এবং ইন্জিনিয়ারিং এবং মেডিকেল ২ টাতেই অংশগ্রহন করার মতো যোগ্যতা ছিলো। তারপরে ছিলো প্রথমবারের/২য় বারের  মতো শুরু হওয়া বা স্কুটিং সিষ্টেম। আরো কোপানলে পড়লাম বিশ্ববিধ্যালয় ভর্তি পরীক্ষারে আগেই স্কুটিং সিষ্টেমে। সে লেখা আরেকদিন। কলেজের ফাইনালে কয়েক বন্ধুর খাতা চালাচালি দেখে আমার মনে একটা ভয় ধরে যায় যে - যদি স্যার দেখতে পায় এক্সামিনার তাহলে তো নিশ্চিত ফেল। আমার একটা নিয়ম ছিলো আমি যা আনসার করতাম তার থেকে ১০ কম ধরতাম অলওয়েজ রেজাল্ট পাবার ক্ষেত্রে। ফলে জোলজী তে ৭৫ এর মধ্যে ৬৫ আনসার করি তারপরে আর মনে আসতেছিলো না। তো সেখানে সামনের বন্ধুকে বলেছিলাম দোস্ত একটা কোশ্চেন একটু বের করে দেখা্ ২/৩ মিনিট  দেখলাম এবং আনসারটা বোঝলাম এবং তাপররে নিজের মতো করে  লিখলাম। যেখানে অনেককেই দেখেছি খাতা পরিবর্তন করে বা একজন আরেকজনের কাছ থেকে খাতা নিয়ে লেখতে- সেখানে ৩/৪ মার্ক আরেকজনের খাতা  দেখে উত্তরটা মনে করা লিখা তে আজো মনে অনকে সময় একটা ছোট খচ খচ করে। পরে বায়োলজী এবং জোলজী দুইটা মিলে আমার ১৩২+ আসে যেখানে জোলজীতে আসে ৬০+(আর সেই প্রশ্নটা কাটা যায় ৩/৪ মার্কস) যেটা আমি আগে আনসার করেছিলাম সেখান থেকে আর যেটার জন্য হেল্প নিছিলাম সেটা আর এড হয় নাই। যাই হোক পরে কলেজের রেজাল্ট বের হবার আগেই পেয়ে যাই মেডিকেলে ভর্তি  কোচিং এ  চান্স পাবার সুযোগ আর সেটা ছিলো জামাত শিবির পন্থী একটা ভর্তি কোচিং যেখানে আমি এডমিশন নিয়েই বুজতে পারি যে লাইফের সেরা ভূল করে ফেলেছি। আমার উচিত ছিলো জেনারেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভর্তি যুদ্ব সামিল হওয়া। ষ্টুডেন্ট পলিটিক্স কি জিনিস তা বুঝতে আমার সময় লেগেছে- বিশ্ববিধ্যালয় হল আর বেঈমানী করা (যা বন্ধুরা আমার সাথে করেছিলো- আমাকে জোড় করে সেই মেডিকেল ভর্তি কোচিং এ ঢুকাইয়া দিয়ে) কি জিনিস তা আমি বুঝেছিলাম মেডিকেলে কোচিং করতে আইসা। শুনেছি আমাকে মেডিকেল কোচিং এ ভর্তি করানোর জণ্য বড় অংকের অর্থও লেনাদেনা হয়েছিলো যেনো এই কোচিং সেন্টারটা আরো ষ্টুডেন্ট পায়। 

সে যুদ্ব কাহিণী আরো একদিন। তো ধরতে গেল অষ্টম শ্রেনী থেকে ঈদের দিন বাদে বিশ্ববিধ্যালয় ভর্তি হওয়া পর্যন্ত ১৯৯৪-১৯৯৮ সালের  ডিসেম্বর পর্যন্ত চলেছে শুধূ গৃহশিক্ষক, ব্যাচ এবং কোচিং। একইসাথে সবচেয়ে ভালো লেগেছে প্রগ্রেসিভ কোচিং ময়মনসিংহ শহরের সেরা কোচিং এ - এসএসসি এবং এইচএসসি দুই টেষ্টের শেষে নিয়মিত কোচিং- ধরতে গেলে ফাইনাল পরীক্ষার মাঝেও ২/১ টা ক্লাস করেছি। তারপরেও শুদ্বভাবে পাশ করে বের হয়ে এসেছে। ভালো মতে পড়ে সঠিক শুদ্ব ভাবে পড়শোনা করে বোর্ড পরীক্ষায় পাশ করে যে তৃপ্ততা বা স্বাদ সেটা তো শুধু আমার কাছে- এইটা তো আমি আর কারো সাথে শেয়ার করতে পারেবা না তবু ও যতোটা পারলাম তুলে ধরলাম । তুলনামূলক ভাবে ভালো রেজাল্ট যারা করেছে তাদের মধ্যে আমি ই সবচেয়ে কম বা গতানুগতিক প্রাইভেট পড়েছি। অল্পের জন্য ইন্টারে মিস করেছিলাম ষ্টার মার্কস (পেয়েছিলাম ৭৩৮) ।এক স্যারের কাছে টানা ২ বছর পরার পরেও উনি ফাইনালে প্রাকটিক্যালে ৫০ এর মধ্যে ৩০+ দিয়েছিলো সব কিূছ লিখা সত্বেও। স্কুল এবং কলেজের প্রাকটিকাল মার্ক টা ছিলো লোকাল স্যারদের হাতে। টানা ২ বছর পরার পরেও এবং সব কিছু ঠিক ঠাক করার পরেও মার্কস পাই নাই ৫০ এ ৫০. এইখানে আরো ১২ মার্কস বেশী পাইলে পাইতাম ষ্টার মার্কস। আর সচরাচর যেভাবে প্রাকটিক্যাল এক্সাম হয় তার থেকে কিছুটা কড়া ছিলো সিষ্টেম । লিডারশীপের মতো একটা ব্যাপার কাজ করতো তখণ মনের মাঝে, চাইতাম যে সবাইকে নিয়ে পাশ করবো কম বেশী।

একটা সাবজেক্টের প্রাকটিক্যাল কম মার্কস পাওয়াটা অনেক দিন মনে দু:খ দেয় কিন্তু পরবর্তী বাংলাধেম গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য মোতাবেক যাইয়া দেখি- অনেক রথী মহারথী পাশই করে নাই ৫ এর পরে- তখন মনটা ভালো হয়ে যায় যে যাহ শালা- অনেকরে চেয়ে তো ভালো করেছি। সেটা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকি।

No comments:

Post a Comment

Thanks for your comment. After review it will be publish on our website.

#masudbcl